মহান আল্লাহ রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর মাধ্যমে ইসলামকে পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান হিসেবে ঘোষণা করেছেন এবং কিয়ামত পর্যন্ত আগত সকলের জন্য মনোনীত জীবনব্যবস্থা হিসেবে নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তাই ইসলামকে সব যুগ, সময় ও স্থানের মানুষের উপযোগী করা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় যাবতীয় বিষয়ের মৌলিক বিধিবিধান এতে রয়েছে। শরীরচর্চার মাধ্যমে শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত হয়। আর ইবাদতের জন্য যে সুস্থ দেহ এবং প্রশান্ত মন প্রয়োজন হয় তা অর্জনে সহযোগিতা করে শরীরচর্চা। ইসলামের বিজয় নিশ্চিত করতে যে পরিশ্রম করা প্রয়োজন, তার জন্যও প্রয়োজন শারীরিক সুস্থতা। এছাড়া পবিত্র কুরআনে তাদের প্রশংসা করা হয়েছে, যারা শরীরিকভাবে সুস্থ ও সুঠাম দেহের অধিকারী। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ মানুষের শারীরিক শক্তিকে নিজের একান্ত অনুগ্রহ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, “আল্লাহ, তিনি তোমাদের সৃষ্টি করেন দুর্বল অবস্থায়, দুর্বলতার পর তিনি দেন শক্তি; শক্তির পর আবার দেন দুর্বলতা ও বার্ধক্য। তিনি যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন এবং তিনিই সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান।” (সুরা তাকভির, আয়াত : ৫৪) রাসুলুল্লাহ (সা.)-ও মুমিনদের শারীরিক সামর্থ্য অর্জনে উৎসাহিত করেছেন। শক্তিশালী মুমিন আল্লাহর প্রিয় : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “শক্তিধর মুমিন দুর্বল মুমিনের তুলনায় আল্লাহর কাছে উত্তম ও অতীব পছন্দনীয়। তবে প্রত্যেকের মধ্যেই কল্যাণ নিহিত আছে, যাতে তোমার উপকার আছে, তা অর্জনে তুমি আগ্রহী হও এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য কামনা করো। তুমি অক্ষম হয়ে যেয়ো না।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৬৬৬৭) একবার আসলাম গোত্রের কিছু লোক বাজারের কাছে প্রতিযোগিতামূলক তির নিক্ষেপের চর্চা করছিল। এমন সময় নবী (সা.) বের হলেন এবং তাদের দেখে বললেন, “হে ইসমাইলের বংশধর, তোমরা তির নিক্ষেপ করো। কেননা, তোমাদের পিতাও তির নিক্ষেপে অভিজ্ঞ ছিলেন।” (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৫০৭) শারীরিক অনুশীলনের মাধ্যমে যে শুধু সুস্থতাই অর্জিত হয় তা নয়, এর মাধ্যমে মনও ফুরফুরে হয়, যা সুস্থ জীবনযাপন ও কাজে বরকতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সুস্থ দেহ ও সুন্দর মনের অধিকারী হয়ে আমরা দ্বীন কায়েমের আন্দোলনকে আরো বেগবান করব, ইনশাআল্লাহ।