ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করলেন হাসিনা

Spread the love

বাংলাদেশের পালিয়ে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ক্ষমতাচ্যুতির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করেছেন। ভারতের আশ্রয়ে থাকা শেখ হাসিনা বিদেশী শক্তি, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তার সাম্প্রতিক ক্ষমতাচ্যুতির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখার জন্য অভিযুক্ত করে তার নীরবতা ভঙ্গ করেছেন। ভারতীয় মিডিয়া দ্য প্রিন্টের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত সরকার বাংলাদেশের রাজনৈতিক সঙ্কটে বিদেশী হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করার ঘোষণা দেয়ার কয়েক দিন পরই শেখ হাসিনার এই বিবৃতি এসেছে।

দ্য প্রিন্ট উল্লেখ করেছে, হাসিনা গত শনিবার তার আওয়ামী লীগ সমর্থকদের উদ্দেশ্যে একটি বার্তায় জানিয়েছেন, ‘আমি ক্ষমতায় থাকতে পারতাম যদি সেন্টমার্টিন ও বঙ্গোপসাগর আমেরিকার হাতে তুলে দিতাম।’
প্রিন্টের রিপোর্টে বলা হয়, হাসিনার শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কয়েক বছর ধরে টানাপড়েনের সম্পর্ক ছিল। এই বছরের জানুয়ারিতে নির্বাচনের আগে, তিনি দাবি করেছিলেন যে ‘একজন শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তি’ তাকে একটি বিমানঘাঁটির বিনিময়ে ক্ষমতায় মসৃণ প্রত্যাবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছিল। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি কর্তৃত্ববাদী প্রধানমন্ত্রী হাসিনা তার সর্বশেষ বিবৃতিতে, নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে বিদেশী শক্তি দ্বারা ‘ব্যবহৃত’ হওয়ার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন।

হাসিনা বলেছেন, ‘আমি পদত্যাগ করেছি যাতে আমাকে লাশের মিছিল দেখতে না হয়। তারা ছাত্রদের লাশের ওপর ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল; আমি সুযোগ দেইনি। আমি ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘হয়তো যদি আমি দেশে থাকতাম, তাহলে আরো প্রাণ হারাতাম, আরো সম্পদ ধ্বংস হতো।’
আগামী সপ্তাহে ভারতে থাকা অবস্থায় হাসিনা গণমাধ্যমের সাথে কথা বলতে পারেন বলে প্রিন্ট আশা প্রকাশ করেছে। কয়েক সপ্তাহের ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের মধ্যে হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করায় ৩০০ জনেরও বেশি লোক মারা গেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং অন্যান্য দেশ এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। ঢাকায় নতুন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে ওয়াশিংটন আশা প্রকাশ করেছে যে এটি বাংলাদেশের জন্য ‘একটি গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব দানকারী নোবেল বিজয়ী ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করা হয়। অতীতে, উইকিলিকস তারগুলো প্রকাশ করেছে যে ইউনূস প্রায়ই আমেরিকান কূটনীতিকদের সাথে দেখা করতেন বাংলাদেশের রাজনীতির অবস্থা সম্পর্কে তার উদ্বেগ প্রকাশ করতেন। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগকারী হিসেবে রয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র ।
আমি শিগগিরই ফিরব : সমর্থক ও দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে তার বার্তায় হাসিনা তার পরাজয় মেনে নিয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি ঘোষণা করেন, ‘আমি শিগগিরই ফিরে আসব। পরাজয় আমার, কিন্তু জয় বাংলাদেশের জনগণের।’ হাসিনা আরো বলেন, ‘আমি নিজেকে সরিয়েছি, আমি এসেছি তোমাদের বিজয় দিয়ে; তোমরা আমার শক্তি ছিলে। তোমরা যখন আমাকে আর চাওনি, আমি পদত্যাগ করেছি। আমার যারা রয়ে গেছে তাদের বলছি, মনোবল হারাবে না। আওয়ামী লীগ বারবার জেগে উঠেছে।’
হাসিনা বলেন, ‘আমি আমার তরুণ ছাত্রদের কাছে আবারো বলতে চাই, আমি তোমাদেরকে কখনো রাজাকার বলিনি… আমার কথাগুলোকে টুকরো টুকরো করা হয়েছে। একটি গোষ্ঠী তোমাদের দুর্দশার সুযোগ নিয়েছে।’

Sources: The Daily Naya Diganta online

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *