পুলিশকে ব্যবহার করেছে লাঠিয়াল বাহিনীর মতো

Spread the love

পুলিশ সদস্যদের ওপর যে হামলা হয়েছে তা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। মাথার চামড়া খুলে ফেলা, হাত-পা-মাথা থেতলিয়ে ফেলা, এটা টলারেট করার মতো না। হাজার তরুণ মারা গেছে পুলিশ ও অন্যদের গুলিতে, এটাও দুঃখজনক। পুলিশ ছাড়া আমাদের এই সমাজ চলতে পারে না। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর লুটপাট হওয়ার খবর পাচ্ছি। আমাদের সেনাবাহিনী ও বিজিবি মাঠে আছে, কিন্তু এটা তাদের কাজ না। পুলিশের যেটা কাজ, সেটা তারা পারে না।
গতকাল রোববার দুপুরে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত পুুলিশ সদস্যদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) এম সাখাওয়াত হোসেন এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, একটা রাষ্ট্র এভাবে চলে না, একজনের ইচ্ছে মতো রাষ্ট্র চালানো যায় না। দেশটা কারো পার্সোনাল প্রপার্টি বা ফ্যামিলি প্রপার্টি না। হাজার হাজার লোক মারা যাওয়ার পরেও ক্ষমতায় থাকতে চাওয়ার মানসিকতা দুঃখজনক। পুলিশকে ব্যবহার করা হয়েছে লাঠিয়াল বাহিনীর মতো। তাদের হাতে গত ১৫-২০ বছর আগের মারণাস্ত্র তুলে দেয়া হয়েছে। এটা দেখে আমি আশ্চর্য হয়ে গেছি। এটা ঠিক হয়নি। আর লাঠিয়াল বাহিনীর মতো ব্যবহার করতে পারবেন না। পুলিশ কমিশনের মতো পুলিশ চলবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, প্রতিদিন সন্ধ্যায় ডাকাতি হচ্ছে। কী করবেন পুলিশ নাই, পুলিশ সদস্যরা ডিমোরালাইজড হয়ে গেছে। আপনাকে মনে রাখতে হবে পুলিশকে ব্যবহার করেছে কে? তাদের ধরেন। আমি চেষ্টা করব। হুকুমদাতা যারা ছিল তাদের শাস্তি হবে, কঠোর শাস্তি হবে। দেশে না পারলে বিদেশে হবে। হুকুম দিয়ে ছেলে-পেলে আর জনগণকে মারবেন, এটা হতে পারে না। আবার আসেন, দেখেন জনগণ কী করে। জনগণ ছিঁড়ে ফেলবে এবার। এটা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে কারা পুলিশকে এভাবে ব্যবহার করেছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরো বলেন, যা হয়েছে হয়েছে, ইতিহাসকে ফেরত আনতে পারব না। আমরা মনে করি আওয়ামী লীগ অনেক পুরনো পার্টি, সেখানে নতুন নেতৃত্ব আসবে। তারা এ শিক্ষাটা গ্রহণ করবে। আমি চেষ্টা করব, যাতে পলিটিক্যাল পার্টি অ্যাক্ট থাকে। সে অনুযায়ী দল চালাতে পারলে চালাবেন, নয়তো বন্ধ করে দেবেন। পুলিশ প্রধানদের বলব, আপনারা অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করবেন না। যাদের টার্গেট করছেন তারা আপনার সন্তান। পুলিশ সদস্যদের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ওনাদের কয়েকজন প্রতিনিধি আসবে, তাদের শত ভাগ কথা শুনব। তারা এমন কোনো দাবি করেননি, যেটা পূরণ করা সম্ভব নয়।

কিছু জায়গায় হয়তো দেরি হবে। আপনারা থানায় ফিরে যান। দেশে স্বাভাবিক পরিস্থিতি কবে নাগাদ ফিরবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা স্বাভাবিক হওয়ার সম্পূর্ণ বিষয় জনগণের কাছে। সংখ্যালঘু যারা আছেন তারা আপনাদের সমাজেই বাস করেন। এ ধরনের হামলা কোথাও করতে দেবেন না। তাদের কোনো দোষ নেই। জনগণের কাছে অনুরোধ আপনারা এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনুন। এ সময় আইজিপি মো: ময়নুল ইসলাম বলেন, আমরা ভিআইপি রোডে ইতোমধ্যে ট্রাফিক সদস্যদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেছি। তিনি বলেন, আন্দোলনে সহিংসতায় ৪২ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন, এর মধ্যে পরিদর্শক ৩ জন ও ২ জন র্যাব সদস্য। আহত অসংখ্য, শুধু রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালেই ৫০৭ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। ২৭ জন বেশি আহত, এদের মধ্যে আইসিইউতে আছেন ২ জন। যারা আহত হয়েছেন তাদের আমরা ফুল সাপোর্ট দিচ্ছি।

Source: Daily Nayadigonto online

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *